বাংলাদেশের ফিডমিল শিল্প গত তিন দশকে শৈশব এবং কৈশোর পেরিয়ে পূর্ণতা পেয়েছে। শুরু হয়েছিল ১ টন বা ২ টন প্রতি ঘন্টায় ম্যাসফিডের মিল দিয়ে। এরপর, ইউরোপের বিখ্যাত দুটি কোম্পানির মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত হয় পিলেট ফিডমিল। প্যারাগন গ্রুপের প্রথম পিলেটমিল স্থাপন হয় বিখ্যাত Buhler মেশিন দিয়ে। আফতাব বহুমূখী ফার্মস শুরু করে Skiold মেশিন দিয়ে। মোটামুটি ২০০০ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশে স্থাপিত ফিডমিলসমূহ প্রতি ঘন্টায় ৩-৫ টন সময়োপযোগী ধরে স্থাপন হয়।
২০০০ সালের পর থেকে মাঝারী থেকে বড় আকারের ফিডমিল প্রতিষ্ঠা শুরু হয়। এই পর্যায়ে প্রতি ঘন্টায় ১০-১৫ টন ক্যাপাসিটির ফিডমিল প্রতিষ্ঠিত হতে থাকে। এই সময় চীন, তাইওয়ান এবং জার্মানীর বেশকিছু মাঝারী এবং বড় ফিডমিল প্রতিষ্ঠিত হয়।
২০০৫ – ২০০৬ সালে চিকস অ্যান্ড ফিডসের তত্ত্বাবধানে FCM-এর প্রতি ঘণ্টায় ২০ টন ক্যাপাসিটির ফিডমিল স্থাপিত হয় নারিশ পোল্ট্রির ভালুকা, মাস্টারবাড়ীতে।
২০০৭ সালে প্রথম ভাসমান ফিডমিল স্থাপিত হয় রূপসী ফিডমিলে। ২০০৮ সালে ভাসমান ফিস ফিড স্থাপিত হয় আফিল ফিস ফিড এবং মেগা ফিডমিলে। আফিল ফিস ফিড FCM মেগাফিড চিয়াতুং এর মেশিন ব্যবহার করে।
২০১০ থেকে ২০১৯ পর্যন্ত সময়কালে দেশের ফিডমিল শিল্প বিশাল আকার ধারন করে। এই সময় প্রায় প্রতিটি কোম্পানী বৃহৎ আকারের আধুনিক ফিডমিল প্রতিষ্ঠায় ব্যস্ত হয়ে পড়ে। যেমন – নারিশ, প্যারাগন, কাজী, আফতাব, প্রভিটা, কোয়ালিটি, আমান, এসিআই গোদরেজ, বিশ্বাস ইত্যাদি। এই সময়ে তিনটি নতুন কোম্পানি পোল্ট্রি ফিড শিল্পে বড় ইনভেস্টমেন্ট নিয়ে আসে। এজি এগ্রো, আগাতা এবং আর আর পি ।
বড় বড় ফিডমিল স্থাপন হয়েছে কিন্তু ১০ টনের বেশী ক্যাপাসিটির পিলেটমিল বাংলাদেশে ব্যবহৃত হচ্ছেনা। সিপি এবং প্রভিটা ঘন্টায় ২০ টন ক্যাপাসিটির পিলেটমিল দিয়ে বড় ক্যাপাসিটির পিলেট ফিডমিলের যাত্রা শুরু করে।
তারই ধারাবাহিকতায় আর আর পি তাঁদের নরসিংদী ফিডমিল সংযোজন করছে ঘন্টায় ২৫ টন ক্ষমতা সম্পন্ন পিলেট মিল। আর আর পি এর নরসিংদী ফিডমিলে ২টি ২৫ টন ক্ষমতার পিলেটমিল সংযোজিত হবে এবং এই ফিডমিলের ক্যাপাসিটি প্রতি ঘন্টায় ৫০ মেট্রিক টন। নরসিংদী ফিডমিল হবে এ যাবৎ নির্মিত বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ ফিডমিল। সম্পূর্ণ অটোমেটিক এই ফিডমিলটি FCM-এর ২৪ ঘন্টা Online Support – এর আওতায় থাকবে।
এখানে উল্লেখ্য ২৫০ কিলোওয়াট মোটর ব্যবহার করে ৭৮০ মডেলের FCM পিলেটমিল এ যাবৎ কালের সবচেয়ে এনার্জি সাশ্রয়ী পিলেটমিল। সম্পূর্ণ স্বয়ংক্রিয় এই পিলেটমিল কোন অপারেটর ছাড়াই WinCC থেকে প্রাপ্ত কমান্ড অনুসারে প্রয়োজনীয় তাপ বা বাষ্প নিয়ে খাদ্য তৈরী করবে।
২০২০ সালের এপ্রিল/ মে মাস নাগাৎ এই ফিডমিলটি উৎপাদনে যাবে বলে আশা করা যায়।